নিজের চিকিৎসার খরচ জোগার করতে রাজধানীতে রিকশা চালাচ্ছেন ছাত্রলীগের এক নেতা। তার নাম টিপু সুলতান। তিনি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ৫ নং ফাগুয়ারদিয়াড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। বিষয়টা নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর বিষয়টা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। ছাত্রলীগ নেতার এমন করুন মুহূর্ত নিয়ে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক গোলাম রাব্বানি।
গোলাম রাব্বানি লেখেন, নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার ৫ নং ফাগুয়ারদিয়াড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি মোঃ টিপু সুলতান দলীয় কার্যক্রমে ছিলেন দারুণ সক্রিয়, এজন্য বিরোধী গোষ্ঠী দ্বারা হয়েছেন অপহরিত ও নির্যাতিত। খেলাধূলা ও এথলেটিক্সে বেশ পারদর্শী টিপু, ঘরভর্তি ক্রেস্ট, মেডেল, সার্টিফিকেট; উপজেলা-জেলা এমনকি বিভাগীয় পর্যায়ে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। জাতীয় পর্যায়ের একজন এথলেট হবার স্বপ্ন দেখতেন অদম্য টিপু সুলতান।
২০১৯ সালে স্থানীয় এমপি সাহেবের ডাকে সাড়া দিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগদানকালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়ে ডান পা ভেঙে সেই স্বপ্নের সলীল সমাধি হলো। পঙ্গুত্ব বরণ করলেও, এমপি ও দলের কাছ থেকে পাননি কোন সহযোগিতা। পারিবারিক দৈন্যদশায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা চালিয়ে সর্বস্বান্ত ছেলেটা উপায়ান্তর না পেয়ে কিছুদিন পূর্বে আমার কাছে এসেছিলো স্থানীয় সাইলকোনা উচ্চবিদ্যালয়ে পিয়ন পদে চাকরির সুপারিশের জন্য।
সব শুনে আমি তৎক্ষনাৎ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির সাথে কথা বলি, তিনি এমপি সাহেবের কথা বললে আমি এমপি শহীদুল ইসলাম বকুল ভাইকে ফোন করে অসহায় ছেলেটাকে চাকরিটা দেয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করি, তিনি আমাকে তখন টিপুকে তার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে চাকরি দেয়ার বিষয়ে কথা দিলেও, সেই কথা রাখেন নাই। টিপু সুলতানের ভাষ্য- ১০ লক্ষ টাকা উৎকোচের বিনিময়ে বিএনপি পরিবারের একজনকে চাকরিটা দেয়া হয়েছে!
১৩ বছর ছাত্রলীগ করে, দলের প্রোগামে অংশ নিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার ছেলেটা অগত্যা জীবিকার দায়ে রিক্সা চালানো শুরু করে। এমপি বা দলের সিনিয়র নেতারা কেউ এগিয়ে না আসলেও ছাত্রলীগের এক ভাইয়ের একান্ত প্রয়োজনে পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রলীগের আরেক ভাই। গতকাল টিপু সুলতানের সাথে দেখা করে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য দুই লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্নেহের Nasir Morol। এছাড়া পরবর্তীতে আরো সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। আমি টিপু সুলতান ও নাসিরের সাথে একাধিকবার কথা বলেছি, আপাতত ওর উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। জাতীয় অর্থোপিডিক্স হাসপাতালের পরিচালকের সাথে টিপুর বিষয়ে কথা বলেছি। ওর সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় নাসিরের সাথে আমিও পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ।